প্রশ্নঃ ০২। কোন কোন প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে?
উত্তরঃ তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ ধারা ২(খ) ও ২(ঘ) অনুসারে নিম্নলিখিত সংস্থা/প্রতিষ্ঠানের কেন্দ্র, বিভাগ, জেলা ও সর্বনিম্ন উপজিলাপর্যায়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিতে হবে। যথাঃ (ক) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে সৃষ্ট কোন সংস্থা;
(খ) বাংলাদেশ সংবিধানের ৫৫(৬) অনুচ্ছেদের অধীন প্রণীত কার্যবিধিমালার অধীন গঠিত সরকারের কোন মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা কার্যালয়;
(গ) কোন সংবিধিবদ্ধ সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান;
(ঘ) সরকারী অর্থায়ানে পরিচালিত বা সরকারী তহবিল হতে সাহায্যপুষ্ট কোন বেসরকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান;
(ঙ) বিদেশী সাহায্যপুষ্ট কোন বেসরকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান;
(চ) সরকারের পক্ষে অথবা সরকার বা সরকারী কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক সরকারী কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত কোন বেসরকারী সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান;
(ছ) সরকার কর্তৃক সময় সময়, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত অন্য কোন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠান।
প্রশ্নঃ ০৩। বিচারবিভাগের তথ্য কিভাবে পাওয়া যাবে?
উত্তরঃ তথ্য অধিকার আইনের ধারা ২(খ) এর (অ) অনুসারে বিচারবিভাগ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী সৃষ্ট সংস্থা। ধারা ৯ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে আবেদনের প্রেক্ষিতে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তথ্য পাওয়া যাবে।
প্রশ্নঃ ০৪। তৃতীয় পক্ষের তথ্যপ্রদানের যৌক্তিকতা কতটুকু?
উত্তরঃ তথ্য অধিকার আইনের ধারা ২(ঝ) অনুযায়ী তৃতীয় পক্ষ অর্থ তথ্যপ্রাপ্তির জন্য অনুরোধকারী বা তথ্য প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ ব্যতীত অনুরোধকৃত তথ্যের সাথে জড়িত অন্য কোন পক্ষ। আইন অনুযায়ী এর যৌক্তিকতা রয়েছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ভূমিসংক্রান্ত তথ্যের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর সঙ্গে তৃতীয় পক্ষ হিসেবে উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রার এর নাম আসতে পারে।
প্রশ্নঃ ০৫। তথ্যপ্রদানের ক্ষেত্রে ‘‘১৯২৩ সালের গোপনীয় আইন’’ এবং ‘‘তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯’’ এর কোনটি প্রাধান্য পাবে ?
উত্তরঃ ১৯২৩ সালের গোপনীয় আইনের যেসব ধারা তথ্যপ্রদানে বাধা হিসেবে চিহ্নিত হবে, সেই সবক্ষেত্রে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ প্রাধান্য পাবে (ধারাঃ ৩)।
প্রশ্নঃ ০৬। তাৎক্ষণিক তথ্য পাওয়া যাবে কিনা ?
উত্তরঃ এ আইনের ধারা ৯ (৪) অনুসারে কোন ব্যক্তির জীবন-মৃত্যু, গ্রেফতার এবং কারাগার হতে মুক্তিসম্পর্কিত তথ্য চাওয়া হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অনুরোধপ্রাপ্তির অনধিক ২৪ (চবিবশ) ঘন্টার মধ্যে প্রাথমিক তথ্য সরবরাহ করবেন।
প্রশ্নঃ ০৭। প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বিশেষ করে নারী ও শিশুরা এই আইন অনুযায়ী কী কী সুবিধা পাবেন?
উত্তরঃ এই আইনের ধারা-৪ অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের তথ্যলাভের অধিকার রয়েছে এবং কোন নাগরিকের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তথ্যসরবরাহ করতে বাধ্য। এই আইনে নির্দিষ্ট করে নারী ও শিশুর কথা বলা হয়নি।
প্রশ্নঃ ০৮। একজন গরীব ও নিরক্ষর মহিলা কিভাবে তথ্য সংগ্রহ করবে এবং এই আইনে সুবিধাবঞ্চিত নারীর কথা বলা আছে কিনা ?
উত্তরঃ এই আইনের ধারা-৪ অনুযায়ী প্রত্যেক নাগরিকের তথ্যলাভের অধিকার রয়েছে এবং কোন নাগরিকের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তথ্যসরবরাহ করতে বাধ্য। সবার জন্য আইন সমান। এই আইনে নির্দিষ্ট করে গরীব নিরক্ষর মহিলার কথা বলা হয়নি। তবে আবেদনকারিনী নিরক্ষর হলে তিনি প্রচলিত নিয়মানুযায়ী টিপসহি দিয়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য আবেদন দাখিল করতে পারবেন।
প্রশ্নঃ ০৯। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে তথ্য নিয়ে কেউ যদি তথ্য বিকৃত করে প্রচার করে, সেক্ষেত্রে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দায়ী থাকবে কিনা ?
উত্তরঃ তথ্য অধিকার (তথ্য প্রাপ্তি সংক্রান্ত) বিধিমালা, ২০০৯ এর বিধি ৪ (৫) অনুসারে প্রদত্ত তথ্যের প্রতিপৃষ্ঠায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার প্রত্যয়ন থাকবে এবং তাতে প্রত্যয়নকারী কর্মকর্তার নাম, পদবী, স্বাক্ষর ও দাপ্তরিক সীল থাকবে। সেক্ষেত্রে কারও তথ্য বিকৃত করে প্রচার করার কোন সুযোগ নেই। তবে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার প্রত্যয়নকৃত তথ্য অন্য কেউ বিকৃত করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দায়ী হবে না।
প্রশ্নঃ ১০। তথ্যের সংজ্ঞায় প্রকারভেদের ব্যাখ্যা আছে কিনা ?
উত্তরঃ এই আইনের ধারা-২(চ) তে তথ্যের সংজ্ঞায় সুস্পষ্টভাবে প্রকারভেদের উল্লেখ রয়েছে। যেমন, ‘‘তথ্য অর্থে কোন কর্তৃপক্ষের গঠন কাঠামো ও দাপ্তরিক কর্মকান্ড সংক্রান্ত যেকোন স্মারক, বই, নকশা, মানচিত্র, চুক্তি, তথ্য-উপাত্ত, লগবই, আদেশ, বিজ্ঞপ্তি, দলিল, নমুনা, পত্র, প্রতিবেদন, হিসাব বিবরণী, প্রকল্প প্রস্তাব, আলোক চিত্র, অডিও ভিডিও, অংকিত চিত্র, ফিল্ম, ইলেকট্রনিক প্রক্রিয়া প্রস্ত্ততকৃত যেকোন ইনস্ট্রুমেন্ট, যান্ত্রিক পাঠযোগ্য দলিলাদি এবং ভৌতিক গঠন ও বৈশিষ্ট্যনির্বিশেষে অন্য যেকোন তথ্যবহ বস্ত্ত বা এর প্রতিলিপিও অন্তর্ভুক্ত হবে। তবে দাপ্তরিক নোটসীট বা নোটসীটের প্রতিলিপি অন্তর্ভুক্ত হবে না।
প্রশ্নঃ ১১। ডিপার্টমেন্টাল আইন থাকলে তথ্য অধিকার আইনে কোন সমস্যা হবে কিনা?
উত্তরঃ তথ্য অধিকার আইনের ধারা-৩ অনুসারে কোন বিভাগীয় আইনের তথ্যপ্রদানে বাধাসংক্রান্ত বিধানাবলী এই আইনের সাথে সাংঘর্ষিক হলে তথ্য অধিকার আইন প্রাধান্য পাবে।
প্রশ্নঃ ১২। তফসিল ‘‘ফরম ক’’ তে প্রাপ্তিস্বীকার উল্লেখ করা হবে কিনা?
উত্তরঃ তথ্য অধিকার (তথ্যপ্রাপ্তিসংক্রান্ত) বিধিমালার বিধি-৩ (২) অনুসারে প্রাপ্তিস্বীকারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
প্রশ্নঃ ১৩। তথ্য জানার অধিকার সবার আছে কি?
উত্তরঃ ‘‘তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর ধারা-৪ অনুসারে কর্তৃপক্ষের নিকট হতে প্রত্যেক নাগরিকের তথ্যলাভের অধিকার রয়েছে এবং কোন নাগরিকের অনুরোধের প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাঁকে তথ্য সরবরাহ করতে বাধ্য।
প্রশ্নঃ ১৪। টেন্ডারে দাখিলকৃত ঘাটতি কাগজপত্র অন্য দাখিলকারীকে জানানো যাবে কিনা?
উত্তরঃ ধারা-৭(৩) অনুযায়ী কোন ক্রয়কার্যক্রম সম্পূর্ণ হবার পূর্বে বা উক্ত বিষয়ে সিদ্ধান্তগ্রহণের পূর্বে সংশ্লিষ্ট ক্রয় বা এর কার্যক্রমসংক্রান্ত কোন তথ্য প্রদান করা বাধ্যতামূলক নয়।
প্রশ্নঃ ১৫। ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া যাবে কিনা?
উত্তরঃ তথ্য অধিকার আইনের ধারা-৭ এর উপধারা (জ), (ঝ), (ঞ) ও (দ) অনুসারে যথাক্রমে কোন তথ্যপ্রকাশের ফলে কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত জীবনের গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ হতে পারে অথবা কোন তথ্যপ্রকাশের ফলে কোন ব্যক্তির জীবন বা শারীরিক নিরাপত্তা বিপদাপন্ন হতে পারে অথবা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তার জন্য কোন ব্যক্তি কর্তৃক গোপনে প্রদত্ত কোন তথ্য অথবা কোন ব্যক্তির আইনদ্বারা সংরক্ষিত গোপনীয় তথ্য প্রদান করা বাধ্যতামূলক নয়।
প্রশ্নঃ ১৬। কাকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হবে বিশেষ করে কলেজে (অধ্যক্ষ, রাজেন্দ্র কলেজ)।
উত্তরঃ কলেজের অধ্যক্ষ যেকোন বিভাগের একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ প্রদান করতে পারেন বা তিনি নিজেও দায়িত্বপালন করতে পারেন।
প্রশ্নঃ ১৭। বিচারাধীন মামলাসংক্রান্ত তথ্য প্রকাশের জন্য পাওয়া যাবে কিনা?
উত্তরঃ এই আইনের ধারা-৭ (ট) ও (ঠ) অনুযায়ী আদালতে বিচারাধীন কোন বিষয় যা প্রকাশে আদালত বা ট্রাইবুনালের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে অথবা যার প্রকাশ আদালত অবমাননার শামিল এবং তদন্তাধীন কোন বিষয় যার প্রকাশ তদন্তকাজে বিঘ্ন ঘটাতে পারে এইরূপ তথ্য প্রকাশের জন্য প্রদান করা বাধ্যতামূলক নয়।
প্রশ্নঃ ১৮। রোগীর ব্যক্তিগত তথ্যাদি (যেমন, এইচআইভি, এইড্স প্রভৃতি) রোগীর অনুমতি ছাড়া দেওয়া যায়না, মেডিকেল ইথিকস্ অনুযায়ী এক্ষেত্রে করণীয় কি?
উত্তরঃ এই আইনের ধারা-৭ (জ) ও (ঝ) অনুসারে ব্যক্তিগত তথ্যাদি প্রদান করা যাবে না।
প্রশ্নঃ ১৯। পোষ্টমর্টেম বা সুরতহাল রিপোর্ট দিতে বাধ্য কিনা?
উত্তরঃ পোষ্টমর্টেম বা সুরতহাল রিপোর্ট চাওয়া যেতে পারে। তবে পোষ্টমর্টেম বা সুরতহালের রিপোর্টটি কোন মামলার তদন্তাধীন বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত হলে এই আইনের ধারা-৭(ঠ) অনুসারে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা তথ্য প্রদান করতে বাধ্য নন।
প্রশ্নঃ ২০। কেউ ব্যক্তিগত তথ্য দিতে বাধ্য কিনা?
উত্তরঃ ধারা-৭(জ) ও (ঝ) অনুসারে ব্যক্তিগত তথ্য দেয়া বাধ্যতামূলক নয়।
প্রশ্নঃ ২১। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তথ্য দেওয়া যাবে কিনা এবং বাধ্যবাধকতা কতটুকু?
উত্তরঃ রেকর্ড সংরক্ষণ করার প্রয়োজনে তথ্যপ্রাপ্তির আবেদন লিখিতভাবে করতে হবে। ধারা-৮(৩) অনুসারে নির্ধারিত ফরমেট/মুদ্রিত ফরমে এবং ই-মেইলের মাধ্যমে তথ্যপ্রাপ্তির অনুরোধ করা যাবে। তবে প্রদেয় তথ্যের প্রতিপৃষ্ঠায় প্রত্যয়নকারী কর্মকর্তার নাম, স্বাক্ষর, পদবী ইত্যাদি থাকতে হবে বিধায় মোবাইল ফোনে তথ্য দেয়ার সুযোগ নেই।
প্রশ্নঃ ২২। যাঁরা লেখাপড়া জানেন না, তাঁরা কিভাবে আবেদন করবে?
উত্তরঃ তথ্য অধিকার আইনের ৮নং ধারা অনুসারে লিখিতভাবে তথ্যপ্রাপ্তির আবেদন করতে হবে। যাঁরা লেখাপড়া জানেন না, তাঁদেরকে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহযোগিতা প্রদান করবেন এবং প্রচলিত নিয়মানুযায়ী আবেদনে টিপসহি দিয়ে দাখিল করতে পারবেন।
প্রশ্নঃ ২৩। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কর্তৃক তথ্যপ্রদানে কী কী করণীয় ও বর্জনীয় দিক রয়েছে ?
উত্তরঃ ‘‘তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর ধারা-৯ অনুসারে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার করণীয় দিক নিম্নরূপঃ
A. দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাগরিকের অনুরোধপ্রাপ্তির তারিখ হতে অনধিক ২০ (বিশ) কার্যদিবসের মধ্যে অনুরোধকৃত তথ্য সরবরাহ করবেন। আর অনুরোধকৃত তথ্যের সাথে একাধিক তথ্যপ্রদান ইউনিট বা কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্টতা থাকলে অনধিক ৩০ (ত্রিশ) কার্যদিবসের মধ্যে উক্ত অনুরোধকৃত তথ্য সরবরাহ করতে হবে।
B. দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কোন কারণে তথ্যপ্রদানে অপারগ হলে অপারগতার কারণ উল্লেখ করে আবেদনপ্রাপ্তির ১০ (দশ) কার্যদিবসের মধ্যে অনুরোধকারীকে অবহিত করবেন।
C. অনুরোধকৃত তথ্য কোন ব্যক্তির জীবন-মৃত্যু, গ্রেফতার এবং কারাগার হতে মুক্তিসম্পর্কিত হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অনুরোধপ্রাপ্তির অনধিক ২৪ (চবিবশ) ঘন্টার মধ্যে প্রাথমিক তথ্য সরবরাহ করবেন।
D. অনুরোধকৃত তথ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট সরবরাহের জন্য মজুদ থাকলে তিনি উক্ত তথ্যের যুক্তিসংগত মূল্য নির্ধারণ করবেন এবং উক্ত মূল্য ৫ (পাঁচ) কার্যদিবসের মধ্যে পরিশোধ করার জন্য অনুরোধকারীকে অবহিত করবেন।
E. অনুরোধকৃত তথ্যপ্রদানের ক্ষেত্রে তৃতীয়পক্ষ জড়িত থাকলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অনুরোধপ্রাপ্তির ৫ (পাঁচ) কার্যদিবসের মধ্যে তৃতীয়পক্ষকে লিখিত বা মৌখিক মতামত চেয়ে নোটিশ প্রদান করবেন।
F. তৃতীয়পক্ষ নোটিশের প্রেক্ষিতে কোন মতামত প্রদান করলে তা বিবেচনায় নিয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অনুরোধকারীকে তথ্যপ্রদানের বিষয়ে সিদ্ধান্তগ্রহণ করবেন।
G. তথ্যপ্রকাশের জন্য বাধ্যতামূলক নয়, এরূপ তথ্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত হবার কারণে কোন অনুরোধ সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করা যাবেনা এবং অনুরোধের যতটুকু অংশ প্রকাশের জন্য বাধ্যতামূলক নয় এবং যতটুকু অংশ যৌক্তিকভাবে পৃথক করা সম্ভব, ততটুকু অংশ অনুরোধকারীকে সরবরাহ করতে হবে।
H. দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইন্দ্রিয় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে তথ্যলাভে সহায়তা প্রদান করবেন। এই আইনের ধারা-৭ অনুযায়ী ২০টি বিষয়ে তথ্যপ্রদান বাধ্যতামূলক নয় এবং ধারা-৩২ এর তফসিলে উল্লিখিত ০৮টি সংস্থাকে তথ্যপ্রদানের বাধ্যবাধকতা থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। তবে উক্ত সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের কোন তথ্য দুর্নীতি বা মানবাধিকারলংঘনের ঘটনার সাথে জড়িত থাকলে তথ্য কমিশনের অনুমোদন গ্রহণপূর্বক উক্ত তথ্য সরবরাহ করতে হবে।
প্রশ্নঃ ২৪। এই আইনে প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্দিষ্টভাবে কিছু বলা হয়েছে কি ?
উত্তরঃ এই আইনের ধারা-৯ (১০) এ ইন্দ্রিয় প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে তথ্যপ্রদানে সহায়তার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিশেষভাবে বলা হয়েছে।
প্রশ্নঃ ২৫। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে নিয়োগ দিবে?
উত্তরঃ তথ্য অধিকার আইনের ধারা-১০ অনুসারে এই আইন কার্যকর হবার ৬০ (ষাট) দিনের মধ্যে প্রত্যেক কর্তৃপক্ষ প্রতিটি তথ্যপ্রদান ইউনিটের জন্য একজন করে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করবে।
প্রশ্নঃ ২৬। ‘‘তথ্য প্রদানে বাধ্য নই’’ অনেক কর্মকর্তা বলে থাকেন। তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হবে?
উত্তরঃ তথ্য অধিকার আইনের ধারা-৯ অনুসারে নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তথ্যপ্রদান করতে বাধ্য। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তথ্যপ্রদানে ব্যর্থ হলে ধারা-২৪ অনুযায়ী তথ্যপ্রদানের সময়সীমা অতিক্রান্ত হবার পরবর্তী ৩০(ত্রিশ) দিনের মধ্যে আপীল কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধকারী আপীল করতে পারবেন। আপীল আবেদন প্রাপ্তির পরবর্তী ১৫ (পনের) দিনের মধ্যে আপীল কর্তৃপক্ষ আবেদনকারীকে অনুরোধকৃত তথ্যসরবরাহের জন্য সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করবেন অথবা গ্রহণযোগ্য না হলে আপীল আবেদনটি খারিজ করে দিবেন। আপীল কর্তৃপক্ষের আদেশে আবেদনকারী সংক্ষুব্ধ হলে ধারা-২৫ অনুসারে পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে তথ্য কমিশনে অভিযোগ দায়ের করতে পারবেন। তথ্য কমিশন অভিযোগটির সাথে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে শুনানীর সুযোগ দিয়ে ৪৫ (পাঁচচল্লিশ) দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত প্রদান করবে। তবে ক্ষেত্রবিশেষে সাক্ষীর জবানবন্দিগ্রহণ এবং তদন্তসম্পাদন করার কারণে অভিযোগনিষ্পত্তির সময়সীমা বর্ধিত করা যেতে পারে। তবে বর্ধিত সময়সহ মোট সময় কোনক্রমেই ৭৫ (পঁচাত্তর) দিনের অধিক হবেনা। অভিযোগ প্রমাণিত হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ওপর জরিমানারোপ করাসহ তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগ্রহণের সুপারিশ প্রদান করতে পারবে তথ্য কমিশন।
প্রশ্নঃ ২৭। একই ব্যক্তি কর্তৃপক্ষ ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হতে পারবে কিনা?
উত্তরঃ তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ অনুযায়ী একই ব্যক্তির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কর্তৃপক্ষ হওয়ার সুযোগ সীমিত।
প্রশ্নঃ ২৮। তথ্য কমিশনের কোন জবাবদিহীতা আছে কিনা ? থাকলে কমিশন কার কাছে জবাবদীহিতা করবে এবং তথ্যমন্ত্রণালয়ের সাথে তথ্য কমিশনের দায়বদ্ধতা কতটুকু ?
উত্তরঃ এই আইনের ধারা-১১(২) অনুসারে তথ্য কমিশন একটি সংবিধিবদ্ধ স্বাধীন সংস্থা হিসেবে রাষ্ট্রপতির নিকট জবাবদিহি করবে। তথ্যমন্ত্রণালয় তথ্য কমিশনকে সাচিবিক সহায়তা প্রদান করে।
প্রশ্নঃ ২৯। ভুল তথ্যপ্রদানের জন্য তথ্য কমিশন কতটুকু ব্যবস্থা নিতে পারবে?
উত্তরঃ এই আইনের ধারা-১৩ (ঙ) অনুযায়ী কোন ব্যক্তিকে ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল তথ্যপ্রদানের জন্য তথ্য কমিশনে কেউ অভিযোগ দায়ের করলে, কমিশন এই আইনের বিধানাবলী সাপেক্ষে উক্ত অভিযোগগ্রহণ, অনুসন্ধান এবং নিষ্পত্তি করতে পারবে।
প্রশ্নঃ ৩০। তথ্য অধিকার আইনে বিভ্রান্তমূলক তথ্যপ্রদানকারী কর্মকর্তার বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা করা যায় কিনা?
উত্তরঃ তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর ধারা-১৩ (ঙ) অনুসারে বিভ্রান্তমুলক তথ্যপ্রদান করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকে ধারা-২৭ (ঘ) ও (ঙ) অনুযায়ী তথ্য কমিশন জরিমানাছাড়াও ধারা-২৭ (৩) বলে অসদাচারণ গণ্য করে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বরাবর সুপারিশ প্রদান করতে পারবে।
প্রশ্নঃ ৩১। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তথ্য প্রদান না করলে তখন কী করণীয়?
উত্তরঃ দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে তথ্যপ্রদান না করলে ধারা-২৪ অনুসারে তথ্যপ্রদানের সময়সীমা অতিক্রান্ত হবার পরবর্তী ৩০ (ত্রিশ) দিনের মধ্যে আপীল কর্তৃপক্ষের নিকট অনুরোধকারী আপীল করতে পারবেন।
প্রশ্নঃ ৩২। তথ্য দেওয়ার জন্য কোন ফি এর ব্যবস্থা আছে কিনা ?
উত্তরঃ তথ্য অধিকার (তথ্যপ্রাপ্তিসংক্রান্ত) বিধিমালা, ২০০৯ এর বিধি-৮ এর ফরম (ঘ) অনুযায়ী ফি’র পরিমান নিম্নবর্ণিত আকারে প্রদান করা হয়েছে- (1) লিখিত কোন ডকুমেন্টের কপিসরবরাহের জন্য (ম্যাপ, নকশা, ছবি, কম্পিউটার প্রিন্টসহ)-এ-৪ ও এ-৩ মাপের কাগজের ক্ষেত্রে প্রতিপৃষ্ঠা ২ (দুই) টাকা হারে এবং তদূর্ধ্ব সাইজের কাগজের ক্ষেত্রে প্রকৃত মূল্য ।
(2) ডিস্ক, সিডি ইত্যাদিতে তথ্যসরবরাহের ক্ষেত্রে-(ক) আবেদনকারী কর্তৃক ডিস্ক, সিডি ইত্যাদি সরবরাহের ক্ষেত্রে বিনামূল্যে (খ) তথ্যসরবরাহকারী কর্তৃক ডিস্ক, সিডি ইত্যাদি সরবরাহের ক্ষেত্রে উহার প্রকৃত মূল্য।
(3) কোন আইন বা সরকারী বিধান বা নির্দেশনা অনুযায়ী কাউকে সরবরাহকৃত তথ্যের ক্ষেত্রে-বিনামূল্যে।
(4) মূল্যের বিনিময়ে বিক্রয়যোগ্য প্রকাশনার ক্ষেত্রে-প্রকাশনার নির্ধারিত মূল্য।
প্রশ্নঃ ৩৩। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সম্মানীর ব্যবস্থা আছে কিনা?
উত্তরঃ তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ অনুসারে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সম্মানীর কোন ব্যবস্থা নেই।
প্রশ্নঃ ৩৪। তথ্য অধিকার আইনের বই পাওয়া যাবে কি?
উত্তরঃ বাংলাদেশ সরকারী মুদ্রাণালয়, ঢাকা কর্তৃক প্রকাশিত ‘‘তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ এর গেজেট ১২.০০ টাকা মূল্যে পাওয়া যাবে অথবা www.bgpress.gov.bd অথবা www.moi.gov.bd থেকে RTI Act, 2009 Bangla ও English নামে বিনামূল্যে download করা যাবে। এছাড়াও তথ্য কমিশন বাংলাদেশ কর্তৃক ‘‘তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯, তথ্য অধিকার (তথ্যপ্রাপ্তিসংক্রান্ত) বিধিমালা, ২০০৯ এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর সম্বলিত একটি বই বিনামূল্যে বিতরণের জন্য প্রকাশ করা হয়েছে।
অনেক কিছুই জানতাম না,আপনার তথ্যবহুল পোস্টের মাধ্যমে জানতে পারলাম।ধন্যবাদ আপনার চমৎকার পোস্টের জন্য।
উত্তরমুছুন